আজকের আংশিক চন্দ্রগ্রহণ, ৫৮০ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম
আজকের পূর্ণিমায় আংশিক চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ঘটনার ভবিষ্যতবাণী করেছেন অনেক বছর আগে। মহাবিশ্ব প্রকৃতির যে নিয়ম মেনে চলে – সেই নিয়মের অনেক কিছুই বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এবং সেই নিয়মের ভিত্তিতেই তাঁরা জানেন কখন সূর্য, পৃথিবী আর চাঁদ ঘুরতে ঘুরতে একই রেখায় চলে আসবে।
সূর্যের আলো সরাসরি পৃথিবীর ওপর পড়ে। ফলে যেদিকে চাঁদ আছে সেদিকে পৃথিবীর ত্রিমাত্রিক ছায়া পড়ে। যেহেতু সূর্য পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড় সেহেতু পৃথিবীর ছায়ার দু'পাশে অনেক বড় প্রচ্ছায়াও তৈরি হয়। পূর্ণিমার চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে থাকে তখন উজ্জ্বল ধবধবে রূপালী চাঁদ লাল হয়ে যায়। চাঁদের আলোর উজ্জ্বলতা কমে গিয়ে এবং পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের সাথে আলোর বিচ্ছুরণে এই লাল রঙ তৈরি হয়। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সময় পুরো চাঁদটিই পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে থাকে। তখন চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। তারপর চাঁদ আস্তে আস্তে সরে গিয়ে পৃথিবীর প্রচ্ছায়ায় যখন আসে তখন চাঁদ আস্তে আস্তে তার উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে থাকে।
এই ঘটনা প্রকৃতির খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত যেমন আমাদের পৃথিবী থেকে দেখা একটি স্বাভাবিক নিত্যদিনের ঘটনা, তেমনিই স্বাভাবিক ঘটনা চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ ইত্যাদি।
এটি বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় শুরু হবে এবং সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিটে শেষ হবে। আংশিক গ্রহণ দুপুর ২টা ৩৪ মিনেটে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাবে, তখন চাঁদের প্রায় ৯৭% পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে যাবে।
আকাশ পরিষ্কার থাকলে আংশিক চন্দ্রগ্রহণের শেষ অংশটুকু বাংলাদেশ থেকে দৃশ্যমান হবে।
ঢাকায় বিকাল ৫টা ১৩ মিনিটে, ময়মনসিংহে বিকাল ৫টা ১১ মিনিটে, চট্টগ্রামে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে, সিলেটে বিকেল ৫টা ০৫ মিনিটে, খুলনায় বিকেল ৫টা ১৮ মিনিটে, বরিশালে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে, ময়মনসিংহে বিকেল ৫টা ১৯ মিনিটে, রাজশাহী এবং রংপুরে বিকেল ৫টা ১৪ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে।
এই বিশেষ আংশিক চন্দ্রগ্রহণটি ৩ ঘন্টা, ২৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ড স্থায়ী হবে, যা ৫৮০ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ হবে।
শেষবার এইরকম একটি চন্দ্রগ্রহণ ঘটেছিল ১৪৪০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। জ্যোতির্বিজ্ঞানে উত্সাহীদেরকে অনুরূপ ঘটনা দেখার জন্য ২৬৬৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন